বিশ্বের ৫জন শীর্ষ তরুণ এবং প্রতিভাবান ফটোগ্রাফার - ওলেগ ডো
লেখিকা - অনন্যা মণ্ডল
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
ওলেগ ডো (Oleg Dou) একজন রাশিয়ান ফটোগ্রাফার যার ছবি এবং ছবিতে ব্যবহৃত রং আমাদের ভাবতে শেখায়। তার জন্ম ১৯৮৩ সালে রাশিয়ার একটি শহরে। মা ছিলেন একজন চিত্রশিল্পী এবং বাবা ছিলেন ড্রেস ডিজাইন ও বহু শিল্পী ও ক্রিয়েটিভ আর্টিস্টের সংস্পর্শে এসেছেন। ছোট থেকেই পছন্দ ছিল ফ্যাশন ম্যাগাজিন পড়া। তখন সবে ১৩ বছর বয়স আর সেই বয়সেই তাঁর প্রথম পরিচয় ফটোশপের সাথে। এরপর ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা এবং ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে কর্মজীবন। ম্যাজিক ঘটে ২০০৫ সালে প্রথম পেশাদার ক্যামেরা কেনার পর। তার ফটোগ্রাফি লিজা ফেটোসেভার হাত ধরে মন কেড়ে নেয় বহু মানুষের।
ওলেগ ডো-র ছবি যেমন স্থান পেয়েছে বিভিন্ন আর্ট প্রদর্শনীতে সেরকমই তা তোলা বিখ্যাত একটি ছবি ফ্রোজেন ড্রিম বইয়ের প্রচ্ছদ হিসেবে স্থান পেয়েছে কনটেম্পোরারি আর্ট ফ্রম রাশিয়া বইটিতে। তার কাজে আমরা প্রায়শই মুখ ও মুখোশ, মডেল এবং ক্যান্ডিড এই ধরণের বিভিন্ন কৃত্রিম কৌশল ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়, যা তাঁর ফটোগ্রাফের বিষয়গুলিকে আরো রহস্যময় এবং আকর্ষণীয় করে তোলে। সব থেকে মজার কথা হলো তার ফটোগ্রাফি শুধুমাত্র ক্যামেরায় তোলা চিত্র নয় তা যেন বাস্তব এবং অতি বাস্তব, সত্যি এবং মিথ্যে, সৌন্দর্য এবং বিষন্নতার অদ্ভুত এক মেলবন্ধন। তিনি নিজেকে ফটোগ্রাফারের চেয়েও একজন যথার্থ আর্টিস্ট বলতে বেশি পছন্দ করেন। স্বতন্ত্র চিন্তা, এবং ডিজিটাল কোলাজ তাকে খুব সহজে প্রতিশ্রুতি শীল একজন তরুণ রাশিয়ান আর্টিস্টের খেতাব এনে দিয়েছে।
Image Source: Behance |
তিনি অনেক সাক্ষাৎকারে বলেছেন প্রযুক্তি এবং ছবি নিয়ে গ্রাফিক্সের কাজ ও থ্রিডি ডিজাইন তাঁর ছোটবেলা থেকে ভীষণ প্রিয়। তিনি গর্বের সঙ্গে বলেন ছেলেবেলায় যে শখ ছিল পরবর্তীতে তাই তাঁর কর্মজীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি তাঁর কাজ করার পদ্ধতি সম্পর্কে বলেছেন যে প্রথমে তিনি একটি স্কেচ দিয়ে শুরু করেন তারপরে শেষ অনুযায়ী মডেল খোঁজার পর স্টুডিও ফটো নিয়ে তার উপর ফটোশপের সাহায্যে রিটাচ এবং ডিজাইনিং এর কাজ করেন। যেকোনো রকমের আর্ট আর্কিটেকচার গান সিনেমা এবং ভ্রমণ তাঁকে কাজ করার প্রেরণা দিয়ে এসেছে সারা জীবন।
Image Source: 121clicks.com |
২০০৭ সালের ইন্টারন্যাশনাল কালার অ্যাওয়ার্ডস, ২০০৮ সালের ইন্টারন্যাশনাল ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ডস এবং ২০০৯ সালে আরতে লাগুনা আর্ট প্রাইজ পেয়ে তিনি অনেক নতুন ফটোগ্রাফারদের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। বহু প্রদর্শনীতে তার ছবি প্রচুর প্রশংসা পেয়েছে।
সাহিত্যে এবং ম্যাগাজিনেও ওলেগ ডো-র ছবি ব্যবহৃত হয়েছে বহুবার। তাঁর কাছে ফটোগ্রাফি শিল্পের এক উন্নত রূপ এবং গভীর বার্তা দেওয়ার মাধ্যম মাত্র। তাই ফটোগ্রাফিকে তিনি কোনো গন্ডিতে বাঁধেন নি, রেখেছেন সীমা ও অসীমের দোলাচলে, সত্য আর কল্পনার সোপানে, পাওয়া না-পাওয়ার মাঝে একফোঁটা স্বতঃস্ফূর্ত সৌন্দর্যের মতো।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন