দিদি

 

লেখিকাঃ- দীপালি ভট্টাচার্য

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------




আজ চিল্ড্রেন্স ডে। সানাই খুব খুশি। স্কুলে কত প্রোগ্রাম। ফ্যান্সি ড্রেস কম্পিটিশনও আছে। প্রোগ্রামে যারা অংশ নিচ্ছে সবাই প্যাকেট পাবে। তবে ওর প্যাকেট ও বাড়িতে নিয়ে আসবে। স্কুলে বন্ধুদের সাথে পিকনিক আছে কিনা! দিয়া, লুনা, মন্দিরা আর সানাই চারজনে মিলে ওই দিনেই পিকনিক করবে ঠিক করেছে। 

মায়েরা বলেছিলেন, "ওরে, তোরা কখন পিকনিক করবি? কম্পিটিশন আছে! আবার স্কুল থেকে খাবারের প্যাকেট দেবে!" কিন্তু সেকথা ওরা শুনলে তো! ওরা বলেছে, কম্পিটিশন এর পরে ওরা পিকনিক করবে! প্যাকেটে তো প্যাটিস, চপ এসব থাকবে! ওগুলো ওরা বাড়িতে খেয়ে নেবে। সন্তানদের জেদের কাছে অনেক সময় মায়েদের হার মানতে হয়! তাঁরা আর কি করবেন! 

সানাই-এর উৎসাহই সবচেয়ে বেশী।  বন্ধুরা এক একজন এক একরকম খাবারের দায়িত্ব নিয়েছে। দিয়া কেক আনবে। লুনা কুলচা আর গাজরের হালুয়া, মন্দিরা আনবে চিকেন কষা। আর সানাই মাটন বিরিয়ানি নিয়ে যাবে বলে প্রমিস করেছে বন্ধুদের কাছে। বিরিয়ানিটা মা দারুণ বানান! আজ তিনিই রান্না করে দিয়েছেন। 

বাবা-মা গেস্ট কার্ড পেয়েছেন। সানাই এসেছে বাবা মার সাথেই। স্কুল কম্পাউন্ড থেকে কিছুটা দূরেই থামল সানাইদের গাড়িটা। সানাই নামতেই পাশের বস্তির বাচ্চা মেয়েটা ছুট্টে এল! সাথে আরো দুজন। - "দিদি, দিদি…." চকলেটের ভাগ নিতে প্রায়ই আসে ওরা!

একটু ভেবে, ওদের সানাই দিদি হেসে বলল, "আজ চকোলেট নয়, অন্য জিনিস এনেছি তোদের জন্য!"

"কি এনেছো দিদি, কি এনেছো!"

বিরিয়ানি ভর্তি বড় বড় দুটো  টিফিন কৌটোর একটা নিয়ে সানাই ওদের সাথে বস্তির দিকে এগোতে যাবে…মা  ফিসফিসিয়ে বললেন, "ওরে, বন্ধুদের তবে কি খাওয়াবি?"

দিয়া মাকে শুধু বলল, "তুমি কি কিছু কম রেঁধেছো মা?"

বাবা মায়ের দিকে তাকিয়ে একগাল হেসে  বললেন, "আমার পাগল মেয়ে! এই কথাটা কিন্তু একেবারে ঠিক বলেছে!" 

মাও হেসে উত্তর দিলেন, "তুমিও কি বাজার থেকে কিছু কম এনেছো!" সানাই ততক্ষণে অনেকটা এগিয়ে গেছে।

ছবির সূত্রঃ ফ্রিপিক


মন্তব্যসমূহ

এই ওয়েবজিনের জনপ্রিয় নিবন্ধঃ-

বিজ্ঞপ্তি

ছোটদের ফটোগ্রাফি শেখা - পর্ব ১ (শ্যাডো প্লে)

হাড় মজবুত করতে চাও? তাহলে রোজ শশা খাও!

ব্যাং রাজকুমারী - পর্ব ১